কর্মস্থলে ফেরার তাগিদে রাজধানীমুখী হচ্ছে মানুষ
স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় :
১০-০৬-২০২৫ ০১:১২:৪৯ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
১০-০৬-২০২৫ ০১:৪৪:২১ অপরাহ্ন
সংবাদচিত্র : ফোকাস বাংলা নিউজ
ঈদের ছুটি শেষ হতে এখনও বাকি আরো চারদিন। কিন্তু এর মধ্যেই রাজধানীতে ফিরতে শুরু করেছেন কর্মজীবী মানুষ। প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ কাটিয়ে আবারও কর্মস্থলে ফেরার তাগিদে বাসে, ট্রেনে ও লঞ্চে করে রাজধানীমুখী হচ্ছেন তাঁরা।
মঙ্গলবার (১০ জুন) ঈদের চতুর্থ দিন সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাস টার্মিনাল ও রেলওয়ে স্টেশনে দেখা গেছে ফিরতি মানুষের আনাগোনা। তবে কোথাও তেমন ভিড় বা বিশৃঙ্খলা নেই। দূরপাল্লার বাসগুলো নির্ধারিত সময়েই ঢাকায় পৌঁছাচ্ছে, ট্রেনগুলোও সময়মতো স্টেশনে প্রবেশ করছে।
ঢাকার কমলাপুর ও বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ফিরতি যাত্রীদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। কেউ কেউ ফিরছেন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে, কেউ কেউ একা। সবার মুখেই ঈদের খুশির ছাপ।
এদিকে, কেউ কেউ আবার ঢাকা ছাড়ছেন। ঈদে কোরবানির ব্যস্ততা শেষে কেউ যাচ্ছেন দেশের বিভিন্ন পর্যটন অঞ্চলে, কেউ ঈদের ছুটি না পেয়ে এখন গ্রামে ফিরছেন পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে। এছাড়াও রয়েছে নানা প্রয়োজনে যাত্রা করা নিয়মিত যাত্রীরাও।
ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, উত্তর-পূর্বাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে সকাল থেকে একে একে ঢাকায় প্রবেশ করছে ট্রেন। প্রতিটি ট্রেনেই ছিল ফিরতি যাত্রীর চাপ। তবে ঈদে বাড়ি যাওয়ার ভোগান্তি থাকলেও ফিরতি যাত্রা অপেক্ষাকৃত স্বস্তিদায়ক ছিল বলে জানিয়েছেন ঢাকায় ফেরা যাত্রীরা।
সিলেট থেকে ফিরেছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শামীম আহমেদ। কমলাপুর স্টেশনে নেমে তিনি বলেন, ‘এই কয়েকটা দিন পরিবারের সঙ্গে কাটিয়ে তৃপ্তি পেয়েছি। এবার একটু আগেই ফিরলাম, যাতে পরের দিন থেকে কাজ নিয়মিত শুরু করতে পারি। ট্রেনে ভিড় ছিল, তবে খুব একটা সমস্যা হয়নি।’
বিমানবন্দর রেলস্টেশনেও ছিল একই চিত্র। ময়মনসিংহ, জামালপুর, রংপুর ও বগুড়া থেকে আসা ট্রেনগুলোতে ছিল প্রচুর যাত্রী। স্টেশন এলাকায় দেখা যায়, যাত্রীরা ট্রেন থেকে নেমেই দ্রুত ছুটছেন বাসস্ট্যান্ড কিংবা রাইড শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে গন্তব্যে পৌঁছাতে।
ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, সকাল থেকে ট্রেনগুলো ঢাকায় ফিরছে। ট্রেনে যাত্রীদের চাপ আছে, তবে অতিরিক্ত নয়। হয়তো আগামী বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবারের ট্রেনগুলোতে চাপ বাড়বে।
এদিকে, খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সড়ক এবং নৌপথেও ঢাকায় ফেরা মানুষের স্রোত দেখা যাচ্ছে। মাওয়া ও পাটুরিয়া ফেরিঘাটে দক্ষিণাঞ্চল থেকে আসা মানুষের ঢল, আর গাবতলী ও মহাখালী বাস টার্মিনালে দেখা গেছে ঢাকামুখী যাত্রীদের ব্যস্ততা।
রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনাল ঘুরে ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যাত্রীরা নির্বিঘ্নে ঢাকায় পৌঁছাতে পারছেন। পথে বড় কোনো যানজট নেই। ঢাকায় প্রবেশের গাজীপুর, আমিনবাজার, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টেও যান চলাচল ছিল স্বাভাবিক। সাধারণত ঈদের পরদিন ও তৃতীয় দিন থেকেই ঢাকায় লোকজন ফিরতে শুরু করে। তবে এবার ঈদ পরবর্তী ছুটি লম্বা হওয়ায় এখনো চাপ বাড়েনি।
জামালপুরের সরিষাবাড়ী থেকে বাসে ঢাকায় ফিরেছেন নুবায়েত হোসেন। মহাখালী বাসস্ট্যান্ডে নামার পর তিনি বলেন, ভাবছিলাম যাওয়ার সময় যেমন ভোগান্তি হয়েছিল, ফেরার সময় হয়তো তার কিছুটা হলেও হবে। কিন্তু সবকিছু খুব স্বাভাবিক ছিল। এমনকি আমাদের বাসটা নির্ধারিত সময়ের আগেই ঢাকায় এসে গেছে। পুরো পথে কোথাও কোনো যানজট চোখে পড়েনি।
নেত্রকোনার মদন থেকে সকালে মহাখালী বাসস্ট্যান্ডে এসে নেমেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী ফাহমিদা বেগম। তিনি বলেন, বাড়িতে ছিলাম ৫ দিন। ঝামেলামুক্তভাবে আসার জন্য আগে আগেই ফিরলাম, যাতে ঢাকায়ও কিছুদিন থাকা যায়। ২ দিন পর থেকে আবার ঢাকায় ফেরার চাপ শুরু হয়ে যাবে। তখন ঢাকায় আসতে যাওয়ার সময়ের মতো ভোগান্তি হবে। সাধারণত ঈদের পর রাস্তায় অস্থিরতা থাকে, কিন্তু এবার দেখলাম পরিস্থিতি শান্ত।
সরকারি ছুটি আগামী ১৪ জুন পর্যন্ত হওয়ায় এখন পর্যন্ত রাজধানীমুখী যাত্রা রয়েছে স্বস্তিকর ও শৃঙ্খলাপূর্ণ।
বাংলা স্কুপ/প্রতিবেদক/এসকে
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স